ব্যবসা করবেন তাও আবার অল্প পুঁজির? জেনে নিন দারুণ লাভজনক ব্যবসার কথা

দিন দিন বাড়ছে জিনিসপত্রের মুল্য। বাড়ছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম, সাথে সাথে বাড়ছে গ্যাসের দামও। এর ফলে সাধারণ মানুষের পক্ষে ভালোভাবে খেয়ে পড়ে থাকাটা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে উঠছে। সংসারে খাওয়ার খরচ থেকে শুরু করে বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ প্রতিটি ক্ষেত্রেই লাগছে প্রচুর প্রচুর টাকা। তাই কম-বেশি প্রত্যেকটি মানুষ এখন চাকরির পাশাপাশি অতিরিক্ত উপার্জনের জন্য পথ খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
আসলে একটি মানুষ কখনোই দুটি চাকরি একসাথে করতে পারেন না। তাই যদি কোন মানুষ চাকরির পাশাপাশি তার বাকি সময়টা কাজে লাগিয়ে একটি ব্যবসা করতে পারেন, তবে তার অতিরিক্ত উপার্জন আসবেই। কিন্তু ব্যবসা মানেই তো প্রচুর মূলধন। বর্তমান সময়ে এমন কিছু ব্যবসার রয়েছে, যা খুব স্বল্প মূলধন দিয়ে শুরু করা যায়। আজকের এই প্রতিবেদনে বলবো তেমনই একটি দুর্দান্ত ব্যবসার কথা।
আপনার কাছে কি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা মজুত আছে? যদি এই অংকের টাকা থেকে থাকে, তবে এখনই শুরু করতে পারেন মুক্ত চাষের ব্যবসা (Pearl Farming)। এই ব্যবসায় সরকার থেকেও ভর্তুকি পাওয়া যায়। কিভাবে ব্যবসা করবেন? কিভাবে মুক্ত চাষ করবেন? কত টাকা আয় হবে? – সমস্ত কিছু জানতে হলে প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
মুক্তো চাষ:-
মুক্ত চাষ করতে হলে প্রথমে প্রয়োজন একটি পুকুর বা জলাশয়ের। অনেকের বাড়িতেই পুকুর থাকে, তাহলে সেই পুকুরেই শুরু করতে পারেন ঝিনুক চাষ। আর যদি আপনার বাড়িতে পুকুর না থাকে তবে আপনাকে নিজের খরচায় অবশ্যই একটি পুকুর খনন করিয়ে নিতে হবে।
আপনি যদি একসাথে ২৫ হাজার বা তার বেশি মুক্ত চাষ করতে চান, তবে এক একর পুকুরের প্রয়োজন হবে। এতে আপনার খরচ হবে প্রায় চার লাখ টাকা। এক্ষেত্রে সরকার থেকে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি পাওয়া যাবে।
আর যদি আপনার কাছে এখন মাত্র ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা থাকে, তবে আপনি ৫০০ ঝিনুক চাষ করতে পারবেন সহজে।
ঝিনুক চাষের জন্য প্রয়োজন সঠিক প্রশিক্ষণের। এখন অবশ্য বিভিন্ন জায়গাতেই কিভাবে ঝিনুক চাষ করা হয়। কিভাবে কৃত্রিম উপায়ে মুক্তো চাষ করা হয় – এই সমস্ত ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গাতে।
আপনি যদি ভালো মানের ঝিনুক চাষ করতে চান, তবে বিহারের দারভাঙ্গা ও উত্তর ভারতে খোঁজ নিতে পারেন। কারণ এই দুটি জায়গাতে খুব ভালো জাতের ঝিনুক পাওয়া যায়।
ঝিনুক তৈরির পদ্ধতি:-
প্রথমে একটি জাল নিয়ে তার মধ্যে ঝিনুক গুলোকে বেঁধে পুকুরে রেখে দিতে হবে।
১০-১৫ দিন পুকুরে থাকার পর সেই সমস্ত ঝিনুকগুলি নিজেদের প্রয়োজনমতো পরিবেশ সৃষ্টি করে নেবে।
এরপর সময়মতো জাল থেকে এক এক করে ঝিনুক বের করে শুরু হবে অস্ত্রপ্রচার।
এই অস্ত্রপ্রচারের মাধ্যমে ঝিনুকের মধ্যে কণা বা ছাঁচ ভরে দেওয়া হবে। এই কণা বা ছাঁচের উপর শুরু হবে প্রলেপ দেওয়ার কাজ।
এই প্রলেপই ঝিনুকের মধ্যে একটি স্তরের সৃষ্টি করবে এবং সেই স্তরটি থেকেই তৈরি হবে কৃত্রিম মুক্তো।
আয়ের পরিমাণ:-
একটি ঝিনুক থেকে মুক্ত পাওয়া যাবে ২ টি করে। প্রতি পিস মুক্তোর বর্তমান বাজারদর ১২০ টাকা। এবার আপনার পুঁজি অনুযায়ী আপনি যত বেশি ঝিনুক চাষ করবেন, তত বেশি পরিমাণে মুক্ত পাবেন। সেই মুক্তো বিক্রি করে তত বেশি পরিমাণ উপার্জন করতে পারবেন। তবে ভালো পরিমান মুক্ত চাষ করে প্রায় ১০ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত খুব সহজেই আয় করা যায়।