বলতে পারবেন কেনো হয় যমজ সন্তান? ৯৯% লোক জানে না

একই মায়ের গর্ভ থেকে একই সাথে জন্ম নেওয়া দুই বা ততোধিক শিশুদের যমজ বলা হয়। চিকিৎশাস্ত্র অনুযায়ী যমজ সন্তান জন্মানোর পিছনে অনেক গুলি কারণ রয়েছে।
সন্তানসুখ সমস্ত নারীর কাছেই চরম প্রাপ্তির বিষয়। তার জন্য নারী হাসতে হাসতে জীবন বাজি রাখে। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই নারী গর্ভবতী হন এবং নির্দিষ্ট সময় শেষে সেই সন্তান ভূমিষ্ট হয়। মূলত মানুষ এক সাথে একটিই সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকলেও কখনো কখনো একসাথে দুই, তিন বা চারটি সন্তানেরও জন্মও দেন। একসাথে দুইয়ের বেশি সন্তানের জন্ম হলে তাদেরকে যমজ বলা। তবে সাধারণ ধারণা অনুযায়ী, যমজ হলেই যে তাদের এক রকমের দেখতে হবে, তা কিন্তু না।
নারী দেহের অভ্যন্তরে ডিম্বাণু এবং শুক্রানুর মিলনের ফলেই নারীরা গর্ভবতী হন। প্রাকৃতিক নিয়মে প্রতিটি ঋতুচক্রে নারীর শরীরের একটি ডিম্বাশয় থেকে একটিই ডিম্বাণু উৎপন্ন হয়। এবং নিষেকের পর ডিম্বানু উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কোনো কারণে এই চক্রের হেরফের একই সময় দুটি ডিম্বাণু উৎপন্ন হলে কিংবা নিষেকের পরেও দ্বিতীয় ডিম্বাশয় থেকে আবার ডিম্বাণু উৎপন্ন হলে তার সংস্পর্শে শুক্রাণু এসে তাকে নিষিক্ত করলে আবারো একটি এমব্রো তৈরি হতে পারে। এই এমব্রোটি পূর্ববর্তী এমব্রো থেকে এক মাস বয়সে ছোট হলেও তারা গর্ভ থেকে একই সময়ে ভূমিষ্ট হয়। আবার একটি
ডিম্বাণু কারভিঙ্গের সময় দুই ভাগে বিভাজিত হয়ে গেলেও যমজ সন্তানের জন্ম হতে পারে। চিকিৎশাস্ত্র অনুযায়ী মোট তিন ধরনের যমজ শিশু দেখতে পাওয়া যায়।
ভিন্নধর্মী যমজ : ভিন্নধর্মী যমজের ক্ষেত্রে শিশুদের আকৃতি, গায়ের রং, চোখ এমনকি চুলের রংও আলাদা হতে পারে। তবে রক্তের গ্রূপ আলাদা না হওয়ার সম্ভবনাই বেশি। এই ধরণের ক্ষেত্রে দুইটি ভিন্ন লিঙ্গের শিশু জন্ম নেয়। এরা আলাদা ভ্রূণঝিল্লিতে অবস্থান করে, আলাদা প্লাসেন্টা থেকে পুষ্টি পায়।
একরকম যমজ : এই ধরণের যমজ সন্তান একই ভ্রূণ থেকে উৎপত্তি হয়। একটি ডিম্বাণু স্বাভাবিক ও সম্পূর্ণ ভাবে বিভাজিত হয়ে দুটি আলাদা ভ্রূণের সৃষ্টি করে। এরা একই ভ্রূণঝিল্লিতে অবস্থান করে এবং একই জায়গা থেকে পুষ্টি এবং অক্সিজেন পায়। এদের ক্ষেত্রে সাধারণত ভ্রূণ দুটি সম লিঙ্গের হয়। এদের দেহের গঠন, মুখের আদল, চুল কিংবা চোখের রং সবই একই রকম হয়। এমনকি একমাত্র এদের আঙুলের চাও বাদে রক্তের গ্রূপও একই হয়ে থাকে।
যুক্ত যমজ : ডিম্বাণু বিভাজনের সময় অসম্পূর্ণভাবে বিভাজিত হলে এই ধরণের যমজ শিশু জন্ম নেয়। এই যমজের দেহ একসাথে যুক্ত থাকে। এদেরকে বলা হয় ‘সায়ামিজ টুইন’। এদের কে সাধারণ ভাবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করতে হয়। তবে মাঝে মাঝে এরা এরা এত নিবিড় ও জটিল ভাবে যুক্ত হয়ে থাকে যে অপারেশনের মাধ্যমে আলাদা করতে গেলে তাদের প্রাণ সংশয় থাকে।